ঋতু পরিবর্তনের সময় আমরা কিছু রোগে আক্রান্ত হই। যেমন- শর্দি, কাশি, হঁচি, গলার ভিতর খুসখুস করা, ইত্যাদি। সঠিক সময়ে এগুলি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে গুরুতর সম্যাও দেখা দিতে পারে। উল্যেখিত সমস্যার নিরাময়ে জন্য আমরা চিকিৎসকের দ্বারস্থ হই বা ঘরোয়া ভাবে এর প্রতিকার করার চেষ্টা করে থাকি। যেমন- ইষদুষ্ণ গরম পানি পানকরি। চা পানকরি। সাথে একটু আদা কুচি, লবঙ্গ বা এলাচ ব্যবহার করি। এতে আশানুরূপ ফলও পাওয়া যায়।
আবার আমাদের অনেকের এমন অভিজ্ঞতাও আছে যে, শিশুকালে কাশি হলে দাদী-নানী তুলসী পাতা, বাসক পাতা, আদার রস গরম করে খাইয়ে দিয়েছেন। এতে রোগের নিরাময়ও হয়েছে। তুলসী পাতা, বাসক পাতা, আদা, লবঙ্গ, এলাচ ইত্যাদির আছে বিশেষ গুন যা উল্লেখিত রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বাসক : বাড়িতে একটা বসক গাছ থাকলে শর্দি, কাশি নিরাময়ের জন্য চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হয় না। আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলে ঝোপে-ঝাড়ে বাসক গাছ দেখা যায়। বাসক পাতার নির্যাস কফ নিবারক। এটি ফুসফুসে বা শ্বাস-নালীতে জমেথাক শ্লেষ্মা সহজেই বাহির করে দেয়। হাঁপানী, ফুসফুসের প্রদাহ এমনকি ব্রংকাইটিস নিরাময়ে বাসক কার্যকরী। এর কাযকরী উপাদান হলো ভ্যাসিনিনি, এডহাটোডিক এসিড, ভিটামিন সি, ইত্যাদি। পানি বিশুদ্ধ করার জন্য এর পাতা কুচি করে কেটে পানিতে মিশালে পানি জীবাণুমুক্ত হয়।
তুলসী : বাসক এর মতো তুলসী গাছও বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। তুলসী পাতা ও আদার রস মধুদিয়ে খেলে কাশি ও হাঁপানীর দ্রুত উপশম হয়। তুলসী পাতার রস নিয়মিত খেলে রক্ত পরিশোধিত হয়। দেখাগেছে যে, বাড়ির আশেপাশে তুলসী গাছ থাকলে মশার উপদ্রব কম হয়। আয়ুর্বেদিক কাশি উপশমকারী ঔষধ তৈরীতে প্রচুর পরিমানে বাসক ও তুলসী ব্যবহৃত হয়।
আদা : শীতকালে শ্বাসকষ্টের প্রকোপ বাড়ে। শ্বাসকষ্ট কমিয়ে দেয়ার বিশেষ ক্ষমতা আছে আদায়। শর্দি, কাশি, হঁচি কমানোর প্রাকৃতিক ঔষধ হলো আদা। আদায় থাকা বিভিন্ন কার্যকরী উপাদান শরীরে রক্ত চলাচল বাড়ায়। হার্ট এ্যটাকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। হজমশক্তি বৃদ্ধি করে।
যষ্ঠিমধু : রোগ নিরাময়ের জন্য গাছের শেকড় ব্যবহৃত হয়। চিবিয়ে রস খেলেও অনেক উপকার পাওয়া যায়। এটি স্বাদে মিষ্টি। ঔষধের তিক্ত স্বাদ দূর করতে যষ্ঠিমধু ব্যবহৃত হয়। কাশি নিরাময়ে, শ্লেষ্মা নিঃসরনে ও গলা ব্যাথা দূর করতে যষ্ঠিমধু খুবই কার্যকরী। যষ্ঠিমধু ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক নাশক হিসাবেও কাজ করে।
লবঙ্গ : ইসোফেগাস ও শ্বাস নালীতে কার্যকারীতার দ্বারা খুসখুসে কাশি উপশমে লবঙ্গ খুবই কার্যকরী। লবঙ্গ ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক নাশক হিসাবেও কাজ করে। দাঁতের ব্যাথা উপশমে লবঙ্গ তেল অত্যন্ত কার্যকরী। মুখের দুর্গন্ধনাশক হিসাবেও কাজ করে।